Jakariya1234 Subscriber 2 years ago |
প্রথম সম্ভাষণ শিরোনামে অনেক কথাই লিখেছিলাম। বারবার কাটাকুটি করে কলম বন্ধ করে বসে থাকলাম। কোনো শব্দকেই সম্পূর্ণ মন হয়নি আমার। প্রিয়তম, প্রিয়বরেষু, ভালবাসা, প্রিয়, আমার তুমি…. কতভাবেই ডাকলাম। হলো না কিচ্ছু হলো না।
এতগুলো বছর আমি একটা শব্দ খুঁজেছি, তোমাকে সম্ভাষণ করবার জন্য।
চিঠি লিখবো অথচ তোমকে ডাকার উপযুক্ত শব্দের অভাবে কতদিন আমি গুটিয়ে নিয়েছি নিজেকে। সামনাসামনি কতভাবেই তো ডাকা যায়! কিন্তু লিখতে গেলেই বিড়ম্বনার শেষ নেই।
জানো, এতগুলো সময় আমরা ফেলে এসেছি অতীতের কোলে। আমাদের দিনের ছায়ার সাথে আমাদেরই পাল্লা চলে।
আজো তোমার কথা ভেবে এই উত্তর পঞ্চাশ ষোড়শী হতে চায় মন। বালখিল্য লুকোতে হিমশিম খায়। কোনো কথা তোমাকে না বললে আমার পেট ভরে না। কিচ্ছু হজম হয় না!সবকিছু তোমাকে বলা চাই-ই। এ কেমন আব্দার বলো তো!
আগে ডায়েরী লিখতাম। মনে আছে তোমার? একবার আমার ডায়েরি পড়ার জন্য তুমি কতই না চেষ্টা করেছিলে! আমিও নাছোরবান্দা! দেইনি তোমায়। আসলে আমার ভীষণ লজ্জা করছিল। ওখানে যে শুধুই তুমি! পাছে ধরা পড়ে যাই সেই ভয়ে দৌড়ে পালিয়েছিলাম।
আজো আমি প্রতিদিনই তোমার সাথে কথা বলি। সারাদিনের সব কথা…. কখন মন খারাপ হলো? কখন কান্না পেলো? কখন তুমি ভীষন টেলিপ্যাথি করেছো? কখন নিজেকে একা লেগেছে? অফিসের পিওনটার ছেলে মারা গেলো। ট্রাষ্ট বাসের জন্য কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি? ছাতিম ফুল ফুটেছে। কোন সকালে শিউলি কুড়িয়ে এলাম। সব কথা বলার একমাত্র মানুষ তুমি আমার।
আজ কদিন বিছানায় পড়ে আছি। হয়তো সময় ফুরিয়ে আসছে আমার! হয়তো গন্তব্যের খুব কাছাকাছি আমি! তোমাকে জানানো হয়নি আমার অসুখের কথা। আর জানবেই বা কেমন করে? আমরাতো নিজেরাই রুখে দিয়েছি সব পথ। ব্যারিকেড বসিয়েছি নিজের ভেতর! এখন আমি হাসপাতালের বেডে। আজ কদিন রোদের দেখা নেই। জাঁকিয়ে বসেছে শীত। আজো কাশির সাথে গলগল করে রক্ত গেলো। শ্বাসটা ঘন হয়ে আসে। অক্সিজেন, নেবুলাইজার, কেমোথেরাপি…. আরো কত কি এখন আমার বেঁচে থাকার অনুষজ্ঞ। লিখতে গিয়ে হাত কাঁপছে।
আমাদের যুগল সময়টা স্বপ্নের মত মনে হয়। সমাজ আর সামাজিকতা নিয়ে নিজেদের ভুলেছিলাম অনায়াসে। তারপর তুমি তোমার পথে,আমি আমার পথে। কেন এত অভিমান হয়েছিল, আজ মনেও করতে পারি না। তবে তুমি বলেই বোধ করি অভিমানের গাঢ়তম রূপে লিখেছিলাম রূপকথা।
জানো শান্তনু,
Alert message goes here